স্টাফ রিপোটার : ঢাকার সাভারে শিক্ষক, প্রবাসী, ব্যসায়ী, চাকুরীজিবীসহ ১৩জনের কাছ থেকে অনুমোদন বিহীন এক আাসন ব্যবসায়ী ফ্লাট দেয়ার কথা বলে প্রায় ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগীরা।
শনিবার সকালে ভুক্তভোগীরা সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনী মহল্লায় নির্মানাধীন ভবনটির সামনে আবাসন ব্যবসায়ী মঞ্জিল বিল্ডার্স এর মালিক নাজমুল আরিফের বিরুদ্ধে মানবন্ধন করেছেন। মানববন্ধনে ভুক্তভোগীদের সাথে জমির মালিকও উপস্থিত ছিলেন।
ভুক্তােগীরা জানায়, একটি ফ্লাট একেক জনের স্বপ্ন। বহু কষ্টের টাকা নিজের ও পরিবারের স্বপ্ন পূরনের জন্য ফ্লাটের বুকিং দেই। কিন্তু আমাদের সেই কষ্টের টাকা আত্মসাত করেছে ডেভেলপার কোম্পানী। ভুক্তভাগীরা আবাসন ব্যবসায়ী মঞ্জিল বিল্ডার্স এর মালিক নাজমুল আরিফের বিচার দাবী করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাংক কলোনী মহল্লায় ১৩শতাংশ জমির উপর ১০তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে চার ইউনিটের ভবনের বেইজমেন্ট পর্যন্ত করার পর থমকে রয়েছে কাজ। প্রায় তিন বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ নির্মান কাজ। ভনটিতে শিক্ষক, প্রবাসী, ব্যসায়ী, চাকুরীজিবীসহ ১৩জন ২০২০ সালে প্রায় ৫কোটি টাকা দিয়ে ১৬টি ফ্লাট বুকিং দিয়েছেন। ২০২২সালের ডিসেম্বরে ফ্লাট বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা ভবনের কোন কাজই করেনি। ভবন নির্মান না করেই টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে আবাসন ব্যবসায়ি নাজমুল আরিফের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগীরা।
সাভার সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষক ফিরোজ হোসেন বলেন, নিজের একটি ফ্লাট হবে সেই আশায় বহু কষ্টে টাকা জোগার করে ২৫লাখ টাকা মঞ্জিল বিল্ডার্স এর মালিক নাজমুল আরিফের কাছে জমা দেই। কিন্তু টাকা নিয়ে তারা কোন কাজই করেনি। এখন পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
মুদি মনোহরী ব্যবসায়ী মো: ফয়জুল্লাহ ব্যবসা থেকে টাকা বের করে ও ধারদেনা করে নিজের একটি ফ্লাট হবে সেই আসায় ২০লাখ টাকা দেন ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে। কিন্তু তারা ভবনের কোন কাজ না করেই টাকা আত্মসাত করেছে ডেভেলপার কোম্পানী। এখন তারও পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
নজরুল ইসলাম নামে একজন একটি ফ্লাটের জন্য ১৮ লাখ টাকা দিয়েছেন। জিয়াসমিন আক্তার দিয়েছেন ২০লাখ টাকা। তিনি মানববন্ধনে তার শিশু সন্তানকে নিয়ে দাড়িয়েছেন।
জিয়াসমিন আক্তার বলেন, তার স্বামী একটি বায়িং হাউজে কাজ করে। নিজেদের একটি ফ্লাট হবে সেই আসায় কষ্ট করে টাকা জমিয়ে ডেভেলপার কোম্পানীকে দেন কিন্তু টাকা নিয়ে তারা ভবনের কোন কাজই করেনি।
কামাল পাঠান দুটি ফ্লাটের জন্য ৬৫লাখ টাকা বুকিং দিয়েছেন মঞ্জিল বিল্ডার্স এর মালিক নাজমুল আরিফের কাছে। ২০২০ সালে বুকিং দেয়া হয়। ২০২২সালের ডিসেম্বর সকলে ফ্লাট বুঝিয়ে দেয়ার কথা ছিল কিন্তু টাকা নিয়ে ডেভেলপার কোম্পানী কোন কাজই করেনি। এমনকি আমারদের টাকাও ফেরত দেয়নি। তারা সব টাকা আত্মসাত করেছে। এখন মঞ্জিল বিল্ডার্সের কারও নাগালও পাই না।
এসব অভিযোগের বিষয়ে আবাসন ব্যবসায়ী মঞ্জিল বিল্ডার্স এর চেয়ারম্যান নাজমুল আরিফের মুঠফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি টাকা আত্মসাত করনি। আমার প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম মোটা অংকের টাকা নিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছে। তাই ভবনের সব কাজ বন্ধ। তবে ফ্লাট মালিক, জমি মালিকদের সাথে একাধিকবার আলোচনা হইছে সবাই ভর্তুকি দিয়েও যেন ভবনটি নির্মান সম্পন্ন হয় কিন্তু কেউ এগিয়ে আসছে না। তবে তাদের এই প্রতিষ্ঠানটির কোন অনুমোদন নেই বলেও স্বীকার করেন তিনি।
Leave a Reply