স্টাফ রিপোটার : ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় চলমান শ্রমিক অসন্তোষ যখন স্বাভাবিক হয়ে শ্রমিকরা উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে তখনই আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল শিল্পাঞ্চল।
মঙ্গলবার সকালে আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় শ্রমিকদের সংঘর্ষে একজন নারী শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২০ শ্রমিক।
নিহত মোছা. রোকেয়া বেগম (৩০) ম্যাসকট গ্রুপের সহকারী সেলাই মেশিন অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। রোকেয়া ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর কারখানাটিতে যোগ দেন।
শিল্প পুলিশ জানায়, ম্যাসকট গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানা শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় বন্ধ ছিল। আজ সকালে বন্ধ কারখানার ফটকে শ্রমিকেরা অবস্থান নিয়ে কারখানা খুলে দেয়ার দাবীতে বিক্ষোভ করে। পরে শ্রমিকেরা পাশের সাউদার্ন ও রেডিয়েন্স গার্মেন্টসে হামলা করেন। এরপর সাউদার্ন ও রেডিয়েন্সের শ্রমিকদের সঙ্গে ম্যাসকটের শ্রমিকদের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে মাসকটের শ্রমিক রোকেয়া বেগম মারা যান।
আশুলিয়া থানার পরিদশক (অপারেশন) নির্মল কুমার দাস বলেন সকাল পৌনে দশটার দিকে ম্যাসকট গার্মেন্টসের শ্রমিকদের সঙ্গে অন্য কারখানার শ্রমিকদের সংঘর্ষে ইটপাটকেল লেগে একজন শ্রমিক মারা যান। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। তাদের সাভার এনাম মডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, এই শ্রমিক অসন্তোষের মধ্যে উৎতি কিছু ঝুট ব্যবসায়ীরা মাথাচারা দিয়ে উঠছে। তারা আশুলিয়ায় মটরসাইকেল সংযোজনের একটি কারখানায় শ্রমিকদের উস্কে দিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টির মাধ্যমে ওয়েস্টেজ মালের ব্যবসা দখলে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় হোসেন ও বাদশাহ নামে দুই যুবকের বিরুদ্ধে।
গত কয়েকদিন ধরে সংঘবন্ধ এই চক্রটি আশুলিয়ার জিরানী এলাকার বাজাজ কোম্পানীর ট্রান্স এশিয়া ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড কারখানায় শ্রমিকদের উস্কে দিয়ে ওয়েস্টেজ মালের (কার্টুন ও পলিথিন) ব্যবসা দখলে নেয়ার চেষ্টা করে আসছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হোসেন ও বাদশার বাড়িতে ট্রান্স এশিয়া কারখানার কিছু শ্রমিক ভাড়া থাকে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে শ্রমিকদের উস্কে দিয়ে কারখানায় অসন্তোষের সৃষ্টি করছে। সেই অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে ওয়েস্টেজ মালের ব্যবসা দখলে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
একইভাবে আলফা ক্লোথিং কারখানার ঝুট ব্যবসাও তাদের নিয়ন্ত্রনে নিতে কারখানার কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে এই চক্রের বিরুদ্ধে। তাদের হুমকিতে আতংকিত হয়ে পরেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ ১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, শান্ত আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলকে কেউ অশান্ত করার চেষ্টা করলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
তবে আতংকিত কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে এষিয়ে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করলে কাউকে পাওয়া যায়নি।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক নির্মল কুমার দাস বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে হুমকিদাতা ও ঝুট ব্যবসা যারা দখলে নিতে শ্রমিক অসন্তোষের চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।