

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় পৃথক ঘটনায় স্বামী-স্ত্রীসহ তিন পোশাক শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করছেন পুলিশ।
সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার কাঁঠালতলা মহল্লার আফাজ উদ্দিনের ভাড়া দেওয়া বাড়ি থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে আশুলিয়ায় খেজুর বাগান এলাকার রেডিয়েন্স পোশাক কারখানার ৮ম তলার ফিনিশিং রুমের ভেতর থেকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় মোস্তফা (৩৫) নামে এক পোশাক শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন- বরগুনা জেলার পাথরঘাটা থানার বড়ইতলা গ্রামের মোস্তফার ছেলে মো. শাওন ও তার স্ত্রী একই জেলার পাথরঘাটা থানার জমাদ্দার বাড়ি গ্রামের শাহ-আলম মাতব্বরের মেয়ে হাফিজা। তারা দুই জনই ‘দি রোজ ড্রেসেস লিমিটেড’ কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো।
নিহত মোস্তফা (৩৫) রেডিয়ান্স জিন্স লি: কারখানার শ্রমিকর।
পুলিশ জানায়, স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে ওই এলাকার আফাজ উদ্দিনের ৫ তলা ভাড়া বাড়ি থেকে নিহত দম্পত্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রায় ৫ মাস আগে এই বাড়ির একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন তারা। তাদের কোন আত্মীয় স্বজনের সাথে এখন পর্যন্ত যোগাযোগ করতে পারিনি পুলিশ।
বাড়ির মালিক আফাজ উদ্দিন বলেন, শাওন ও হাফিজা দম্পতি প্রায় ৫ মাস আগে বাসা ভাড়া নেয়। তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল না। কিন্তু কি কারনে তারা আত্মহত্যা করেছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখানে তাদের কোন আত্মীয় স্বজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। যে কারনে তাদের ব্যাপারে কোন তথ্য মেলেনি।
তিনি ধারণা করছেন, ফ্যানের সাথে ওড়না পেচিয়ে প্রথম শাওন আত্মহত্যা করে। তার স্ত্রী বাসায় এসে স্বামীর ঝুলন্ত লাশ দেখে নিচে খাটের উপর নামায় পরে সে নিজেও ফাস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
অপরদিকে, আশুলিয়া খেজুর বাগান এলাকায় মোস্তফা (৩৫) নামের এক শ্রমিক রেডিয়ান্স জিন্স লি: কারখানার
৮ম তলায় ফিনিশিং সেকশনের গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক শামসুল হক বলেন, ওই কারখানার ভিতরে এক শ্রমিক আত্মহত্যা করেছেন। এর পর থেকে শ্রমিকরা কারখানার ভিতরে বিক্ষোভ করছেন। এখানে শিল্প-পুলিশ-১ এর একটি টিম ও সেনাবাহিনীর একটি টিম কাজ করছেন। আমরা কারখানার বাইরে অবস্থান করছি। তবে কিভাবে শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে তা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ওই পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা । তবে তাৎক্ষণিকভাবে নিহতের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোমিনুল ইসলাম ভূইয়া সাংবাদিকদের বলেন, কারখানার ভেতরে ৮ম তলায় রুম থেকে ওই শ্রমিকের ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া গেছে। রাতে কারখানা বন্ধ হওয়ার পরে সে কখন কারখানায় প্রবেশ করেছে তা কারখানা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করতে পারেনি। ময়না তদন্তের মাধ্যমে ওই শ্রমিকের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।