

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকার ধামরাইয়ে একটি বিনোদন কেন্দ্রে পিকনিকে আসা শিক্ষার্থীদের মোবাইল, মানিব্যাগ লকার থেকে হারানোকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী ও পার্ক কর্মচারীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত জখম করার ঘটনায় জড়িত ৪জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ধামরাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
বুধবার বিকেল ৫টার দিকে ধামরাই উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের সিতি এলাকায় আলাদীন্’স পার্কে বনফুল আদিবাসী ফাউন্ডেশন ট্রাষ্ট কর্তৃক পরিচালিত ‘বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ’র শিক্ষার্থীদের সাথে এই ঘটনা ঘটে। ওই দিন সকাল ১০টার দিকে মিরপুরের ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিনোদন কেন্দ্রটিতে পিকনিকে আসেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে- মো. রাকিব (২৩), অন্তর (১৮), মো. সুমন (৩১) ও মো. রানা (২৩)। তারা সবাই ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের সীতি এলাকার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেপ্তারদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম।
ওসি বলেন, বুধবার দিবাগত গভীর রাতে ‘বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ’র শিক্ষক মো. আব্দুল হাই বাদী হয়ে ধামরাই থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামী ছাড়াও আলাদীন্’স পার্কের মালিক মালিক মো: আলাউদ্দিন (৫৭), তার ছেলে পার্কের পরিচালক রিফাত মাহমুদ (৩৫), পার্কের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা নকিবুল হাসান রনি (৪৮), পার্কে কর্মরত আবুল কালাম আজাদ (৩৫)সহ অজ্ঞাতনামা আরো ২৫ থেকে ৩০ জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলার বাদী ‘বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ’র শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সাংবাদিকদের বলেন, আলাদীনস পার্কের লোকজন আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। তারা কাঠের লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মারধর করে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালালে কয়েকজন শিক্ষার্থী রক্তাক্ত জখম হয়। আহতদের ধামরাই ও সাভারের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় জড়িত ও মামলার এজাহারনামীয় আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত; বুধবার সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে ধামরাই উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের সিতি এলাকায় আলাদীন্’স পার্কে বনফুল আদিবাসী ফাউন্ডেশন ট্রাষ্ট কর্তৃক পরিচালিত ‘বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ’র শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৬৫০ জন ১২টি বাসে করে বিনোদন কেন্দ্রটিতে আসেন। দুপুরের দিকে শিক্ষার্থীরা নিজেদের মোবাইল, মানিব্যাগসহ মালামাল পার্কের লকারে রেখে ওয়াটার পার্কে নামেন। তবে পানি থেকে উঠে কয়েকজন শিক্ষার্থী লকার খোলা ও সেখানে রাখা মোবাইল, মানিব্যাগ খুঁজে পাননি। শিক্ষার্থীরা এজন্য পার্ক কর্মচারীদের দায়ী করলে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। বিষয়টি কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকদের মধ্যস্ততায় মীমাংসা হয়, তবে মুঠোফোন খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিকেল ৫টার দিকে বিনোদন কেন্দ্র ছেড়ে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা মুঠোফোন না পাওয়া পর্যন্ত বিনোদন কেন্দ্র ছেড়ে যেতে আপত্তি জানান। একপর্যায়ে তারা বিনোদন কেন্দ্রের ভিতরে বিশৃঙ্খলা ও ভাংচুর করে। তখন বিনোদন কেন্দ্রের কর্মচারীরা তাদের ওপর চড়াও হয়। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পার্ক কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের পরিবহনের অন্তত ৮টি বাসে ভাংচুর করে। সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৬০জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।