

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকার ধামরাইয়ে স্থানীয় এক আবাসন কোম্পানির পক্ষ নেওয়ায় এলাকার লোকজনের হামলায় নিহত হয়েছে সাবেক ইউপি সদস্য। তার দুই চোখ তুলে ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর থেকে ওই এলাকার অধিকাংশ লোকজন আত্মগোপনে চলে যায়।
শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের মাকুলিয়া গ্রামের ‘আকসিরনগর আবাসন’ প্রকল্পের ভিতরে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত বাবুল হোসেন (৫০) ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের মাকুলিয়া গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে। তিনি কুল্লা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের দুই বারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য ছিলেন।
নিহতের ভাতিজা মাহিন হাসান বলেন, জুম্মার নামাজের সময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এলাকার আরশাদ, শওকত, শরিফ, আসাদ, মনিরসহ আরো কয়েকজন মিলে লোহার পাইপ, হাতুড়ি, চাকু দিয়ে আঘাত করে ও চোখ খুঁচিয়ে আমার চাচাকে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, চাচা আকসিরনগর আবাসন প্রকল্পের হয়ে কাজ করতেন। সকাল থেকে তারা ওই হাউজিং এর ভিতরে সরিষার গাছ শুকাচ্ছিলেন। নামাজের সময় আমার চাচি চাচার জন্য বাসায় খাবার আনতে যায়। তিনি ফিরে এসে দেখেন হামলাকারীরা আমার চাচাকে রক্তাক্ত জখম করেছে। আমার চাচী তাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও মারধর করে। পরে তিনি পাশের মসজিদে এসে বিষয়টি খুলে বললে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে চাচাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এনাম মেডিকেলের ডিউটি ম্যানেজার ইউসুফ আলী বলেন, বিকেল তিনটার দিকে মৃত অবস্থায় ধামরাই থেকে বাবুল হোসেন নামের একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। নিহতের মরদেহ বর্তমানে হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
নিহতের স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার জানান, তিনি ও তার স্বামী আকসিরনগর আবাসন প্রকল্পে সরিষা শুকাচ্ছিলেন। এসময় এলাকার কিছু লোকজন সেখানে অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রকাশ্যে তার স্বামীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করে। তিনি বলেন, তার স্বামী কোন আবাসন প্রকল্পের সাথে জড়িত নয়। তবে এলাকার কিছু লোক প্রায়ই তাকে হুমকি-ধমকি দিতেন। তিনি তার স্বামী হত্যার বিচার দাবি করেন।
তবে আকসিরনগর আবাসন কোম্পানীর মালিক তৌহিদুল ইসলাম দাবি করেন, নিহত বাবুল হোসেন তাদের লোক। এলাকার লোকজন মিলে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, হত্যাকান্ডের খবর আমরা পেয়েছি। নিহতের মরদেহ সাভারের এনাম মেডিকেলে রয়েছে। আমাদের কয়েকটি টিম কাজ শুরু করেছে। বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছি। ঘটনা সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।