মঙ্গলবার, এপ্রিল ২২, ২০২৫. ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ

কেমিক্যালের মিশ্রনে ভেজাল তৈল ও শিশুখাদ্য তৈরী কারখানায় অভিযান

কেমিক্যালের মিশ্রনে ভেজাল তৈল ও শিশুখাদ্য তৈরী কারখানায় অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার সাভারে অনুমোদন বিহীন বিষাক্ত কেমিক্যালের মিশ্রনে তৈরি ভেজাল সয়াবিন তৈল, সরিষা তৈল, ডিটারজেন পাউডার, শিশু খাদ্য তৈরীরসহ দুটি প্রতিষ্ঠানে অভিযার চালিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। অভিযানে কারখানা দুটি সিলগালা ও মেশিনারীজসহ তৈরী মালামাল ধ্বংস করে দিয়েছে।
সোমবার দুপুরে সাভারের আড়াপাড়া মেশিনপাড় মহল্লায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সরেজমিনে দেখাগেছে, একটি টিনসেড বাড়ির দুটি কক্ষের একটিতে তৈল ও অপরটিতে ডিটারজেন পাউডার তৈরী হতো। একটি ড্রামের ভিতরে ডালডা, পামওয়েলের সাথে বিষাক্ত কেমিক্যালের মিশ্রনে তৈরি ভেজাল সয়াবিন তেল লগো লাগিয়ে বোতলজাত করে বাজারে বিক্রি করছে।
নেক্সাস ফুড এন্ড কনজুমার কোম্পানির নামে তৈরী হতো নেক্সাস সরিষার তৈল, গৃহিনী ফার্টিফাইড সয়াবিন তৈল, এক্সেল উইন ওয়াস, নেক্সাস এক্সট্রা পাওয়ার, হ্যানকো পাউডার, নেক্সাস লিকুইড ডিস ওয়াস, বিভিন্ন ধরনের আচার তৈরী হতো। প্রতিটি ভেজার পন্যের গায়ে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এর লগো লাগানো থাকলেও ছিলনা কোন অনুমোদন।
কারখানাটির মালিক লিয়াকত হোসেন বলেন, বাজার থেকে ড্রামে তৈল কিনে এনে বোতলে ভরে বাজারজাত করি। কোন কেমিক্যাল মিশাইনা। ব্যবসা করে খাই, এখানে দোষের কি। বিএসটিআই এর লগো কেন দিছেন জিজ্ঞেস করলে বলেন, এই লগো দিলে তৈল বেশি বিক্রি হয়। তবে তার প্রতিষ্ঠানের কোন অনুমোদন নেই স্বীকার করে বলেন, কোন প্রডাক্টটে কি পরিমান ক্যামিকেল দিতে হবে তা তিনি নিজেই মেশান। নিজেকে তিনি ক্যামিস্ট দাবী করেন। আগের অন্যের কারখানায় কাজ করতেন সেখান থেকে কোন পন্যে কি পরিমান কেমিক্যালমিশ্রন করতে হবে তা শিখেছেন তাই নিজেকে ক্যামিস্ট দাবী করেন।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভুমি) জহিরুল ইসলাম বলেন, কারখানাটিতে যা তৈরী হতো সবই ভেজাল। কেমিকেলদিয়ে সয়াবিন তৈল তৈরী হতো যা মানবদেহের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর। বিভিন্ন শিশু খাদ্য। ওয়াশিং পাউডার তৈরী হতো যা হাতের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। কারখানার উৎপাদিত সমস্ত মালামাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। মেশিন জব্দ করে কারখানাটি সিলগালা করা হয়েছে।
অপরদিকে পাশের আরেকটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শিশু খাদ্য ‘সন্দেশ’ তৈরী কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। তখন কারখানায় কাউকে পাওয়া না গেলেও কারখানার সমস্ত মালামাল ধ্বংস করে দেওয়া হয়। কারখানাটিতে সুমন ফুড প্রোডাক্টস এর সুমনের মিল্ক এন্ড টফি সন্দেস তৈরী হতো। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পঁচা মিস্টির সিরার সাথে কেমিক্যালের মিশ্রনে তৈরী করা হতো এসব শিশু খাদ্য। তবে কারখানাটির যৌথ মালিক মমিন, আপন ও হায়াত পালিয়ে যাওয়ায় কারও যাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভুমি) জহিরুল ইসলাম বলেন, নোংরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কেমিক্যালের মিশ্রনে তৈরী করা হতো এসব শিশু খাদ্য। কারখানায় কাউকে পাওয়া না পাওয়ায় সমস্ত মালামাল ধ্বংস করে কারখানাটি সিলগালা করা হয়েছে।
পাশেই বাড্ডা ভাটপাড়া মহল্লায় ইলিয়াস আহমেদের মালিকানাধীন ‘আল মদিনা সিটি’ লগো লাগিয়ে কেমিকেলের মিশ্রনে আরেকটি ভেজাল তৈল তৈরীর কারখানা থাকলেরও রহস্যজনক কারনে সেটিতে অভিযান পরিচালনা করেননি। যদিও প্রথমে বলেছিলেন অভিযান করবেন।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জহিরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আজকে সময় নাই তাই অভিযান করতে পারবো না। পরে দেখবো বিষয়টি।

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *