স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকার সাভারে মেঘনা ফিডের আড়ালে অনুমোদনহীন ফ্রেসটেক এগ্রো লিমিটেড কারখানায় মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ও রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে হাঁস, মুরগি, গরু ও মাছের খাদ্য তৈরি ও বাজারজাতের অভিযোগে কারখানাটিতে অভিযান পরিচালনা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
সোমবার বিকেলে সাভারের হেমায়েতপুর এলাকার মুশুরীখোলা মহল্লায় ফ্রেসটেক এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কারখানায় এ অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) জহিরুল আলম। এ সময় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শওকত আলীসহ প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযান চলাকালে ভ্রাম্যমান আদালতকে কারখানা অনুমোদনের কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি দায়িত্বরত কর্মকর্তারা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) জহিরুল আলম বলেন, পশু খাদ্য তৈরির এই কারখানাটিতে সরকারের কোন অনুমোদন ও পরিবেশের ছাড়পত্র নেই। এছাড়া কারখানার ভিতরে বিপুল পরিমাণ মেয়াদ উত্তীর্ণ ভেজাল পশু খাদ্য বস্তা ভরা রয়েছে। কোন পশু এই খাবার খেলে মারাত্মক ক্ষতি হবে এছাড়া সেই পশুর মাংস মানুষের শরীরের উপর প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। তাই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ১০ এর ৪৩ ধারায় অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য প্রস্তুত করার দায়ে এই প্রতিষ্ঠানকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা করে দেওয়া হয়। এছাড়া মেয়াদ উত্তীর্ণ মালামালগুলো পরবর্তীতে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ধ্বংস করে দেওয়া হবে।
সরেজমিনে মুশুরীখোলা মহল্লায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে ফ্যাক্টরীটির মূল ফটকে মেঘনা পোল্ট্রি অ্যান্ড ফিস ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড সাইনবোর্ড ব্যবহার করছে ‘ফ্রেসটেক এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড’ নামে ফিড তৈরি করছে।
বিশাল আয়তনের গোডাউন ও কারখানা দুই দিন আগেও স্যাঁতস্যাঁতে, দূষিত পরিবেশে স্তূপ করা ছিল শতশত বস্তা মেয়াদউর্ত্তীণ ভেজাল খাদ্য, মুরগির বিষ্ঠাসহ বিভিন্ন কাঁচামাল ও রাসায়নিক দ্রব্য । কিন্তু সংবাদ প্রকাশের পর তা পরিষ্কার করে রাখেন। পুরনো বস্তা পাল্টিয়ে নতুন বস্তায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ফিড ভরে রাখেন। কিন্তু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, নতুন বস্তায় পুরনো ফিট ভরেও তাদের শেষ রক্ষা হলো না।
এদিকে এই কারখানায় অভিযানের পর সিলগালা করার খবর পেয়ে এলাকার অনেককেই আনন্দ উল্লাস করতে দেখা গেছে।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা জানান, এসব খাদ্য মাছ, মুরগি ও গরুকে খাওয়ানো হলে তা বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে। এসব খাদ্য ব্যবহারে দ্রুত সময়ে মাছ, মুরগি ও গরুকে বড় করে উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করে।
সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শওকত আলী বলেন, ফ্রেসটেক এগ্রো কারখানাটির কোনো অনুমোদন নেই, তার মধ্যে মেয়াদ উত্তীর্ণ মালের অভাব নাই। এসব খাদ্য খেয়ে বেড়ে ওঠা মাছ ও মুরগির গোশত, ডিম খেলে মানুষের পেটের অসুখসহ নানারকম রোগ দেহে বাসা বাধতে পারে। তিনি আরো বলেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ মালামাল গুলো কারখানা কর্তৃপক্ষের নিজ খরচে ধ্বংস করার ব্যবস্থা করা হবে।
Leave a Reply