স্টাফ রিপোর্টার : ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে নির্ধারিত পরীক্ষার হলে উপস্থিত হয়ে খাতায় লিখে দেওয়া, খাতা দেখা, এমনকি ভাইভা বোর্ডেও থাকে দালালদের উপস্থিতি। এ ছাড়াও কর্মকর্তাদের অবর্তমানে পুরো অফিস যেন দালালদের অভয়ারণ্য।
সাভার সাব সার্কেল ও ঢাকা জেলার অফিসে ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনকারীদের গাবতলী পরীক্ষার মাঠে দালাল ধরলেই মেলে সব ধরনের সেবা। এক্ষেত্রে আর কোনো ধরনের যোগ্যতার প্রয়োজন পড়ে না। সবচেয়ে বেশি অনিয়মের ঘটনা দেখা যায় মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে। অভিযোগ উঠেছে, অনিয়মের মূল হোতা হিসেবে কাজ করছেন বিআরটিসির গাবতলী ডিপোর ফারুক রেজা। তবে সবকিছুর মুলে রয়েছে বিআরটিএর ঢাকা জেলা সার্কেলের মোটরযান পরিদর্শক মোঃ হাসান। ফলে সব ধরনের শর্ত পূরণ করেও হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা। বাধ্য হয়ে দালাল ধরে সেবা নিতে হচ্ছে তাদের।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ফারুক রেজা বলেন, এই মাঠে যারা ড্রাইভিং লাইসেন্স এর পরীক্ষা দিতে আসে আমি তাদের প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। কাউরে পাস করিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আমি রাখিনা। মোটরযান পরিদর্শক যারা আছে সেটা তাদের ব্যাপার।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, পরীক্ষার মাঠে দালালরা আশপাশে ঘুরাফেরা করে। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ সরাসরি দালালদের মাধ্যমে এসেছেন, কেউ আবার পরীক্ষার মাঠে এসে কোনো উপায় না পেয়ে দালালদের শরণাপন্ন হয়। পরীক্ষার দিন দালাল ধরা এসব লাইসেন্স প্রার্থীদের পাস করানো বাবদ প্রতিজন থেকে নেওয়া হয় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। সন্ধ্যায় দালালদের থেকে টাকা বুঝে নেন পরিদর্শক মোঃ হাসান।
ভুক্তভোগীরা জানান, দালাল না ধরে ভালোভাবে পরীক্ষা দিলেও ফেল করিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু দালাল ধরলে আর এসব চিন্তা থাকে না। দালালরা খাতা দেখার আগেই মোটরযান পরিদর্শককে রোল দিয়ে দেয়। আর সেজন্য কোনোমতো লিখলেও পাস করিয়ে দেওয়া হয়। তারা আরও বলেন, অনেক সময় দালালরা নিজেরাই খাতা দেখে দেয়। তারা আগে থেকে বলে দেয় আপনি শুধু টাকা দেন পাস করিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের। হয়রানি থেকে বাঁচতে পরীক্ষা দিতে আসা প্রায় সকলেই তাই দালাল ধরে আসে। এক্ষেত্রে সরকারের নির্ধারিত ফি থেকে ডবল এবং অনেক সময় তারও বেশি টাকা দিতে হয়।
বিআরটিএ সাভার সাব সার্কেলে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন মনির হোসেন নামের এক যুবক। কিন্তু অর্থের বিনিময়ে তাকে সব পরীক্ষাতেই পাশ করিয়ে দেওয়া হয়।
এব্যাপারে জানতে ঢাকা জেলা সার্কেলের মোটরযান পরিদর্শক মোঃ হাসানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
Leave a Reply